এইচএসসি ২০২২ বাংলা ২য় প্রশ্ন ও সমাধান (বরিশাল বোর্ড)

HSC 2022 Barisal  Board bangla 2nd paper question & solution  

সময়: ২ ঘণ্টা                        পূর্ণমান: ৫০

এইচএসসি বরিশাল বোর্ড ২০২২ বাংলা ২য় পত্র প্রশ্নসহ উত্তর মালা (ব্যাকরণ অংশ)

১. ক) ‘এ’ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো: ৫

‘এ’ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম:
১. তৎসম শব্দের এ-এর উচ্চারণ সাধারণ অবিকৃত থাকে। যেমন: বেদনা (বেদোনা), দেবতা (দেবোতা)।
২. আদ্য এ-এর পরে ‘অ’ বা ‘আ’ থাকলে সেই ‘এ’ এর উচ্চারণ ‘অ্যা’ এর মতো হয়। যেমন: এক (অ্যাক্), তেমন (ত্যামোন্)।
৩. এ-কারযুক্ত ধাতুর সঙ্গে ‘আ’ প্রত্যয় যুক্তগ হলে সেই ‘এ’-এর উচ্চারণ অ্যা-রূপে হয়ে থাকে। যেমন: খেলা (খ্যালা), বেলা (ব্যালা)।
৪. শব্দের শেষের এ-এর উচ্চারণ সাধারণত অবিকৃত থাকে। যেমন: পথে, ঘাটে, হাটে।
৫. একাক্ষর সর্বনাম পদের ‘এ’ সাধারণত অবিকৃত এ-রূপে উচ্চাতির হয়। যেমন:  সে, যে, কে, রে।

অথবা, খ) শব্দের বানান শুদ্ধ করে লেখো (যেকোনো পাঁচটি):

অশুদ্ধ বানান = শুদ্ধ বানান
আনুষাঙ্গিক = আনুষঙ্গিক
বাংগালী = বাঙালি
মহত্ব = মহত্ত্ব
দুরাবস্থা = দুরবস্থা
ঐক্যমত = ঐকমত্য
ইতিপূর্বে = ইতঃপূর্বে
নুন্যতম = ন্যূনতম
আকাংখা = আকাঙ্ক্ষা

২. ক) উদাহরণসহ বিশেষ্য পদের শ্রেণিবিভাগ দেখাও। ৫

বিশেষ্য:
যেসব শব্দ দিয়ে ব্যক্তি, প্রাণী, স্থান, বস্তু, ধারণা ও গুণের নাম বোঝায়, সেগুলোকে বিশেষ্য বলে। যেমন- নজরুল, বাঘ, ঢাকা, ইট, ভোজন, সততা ইত্যাদি।

বিশেষ্যের শ্রেণিবিভাগ:

বিশেষ্য সাধারণত ছয় প্রকার:

১. নাম-বিশেষ্য:
ব্যক্তি, স্থান, দেশ, কাল, সৃষ্টি প্রভৃতির সুনির্দিষ্ট নামকে নাম-বিশেষ্য বলা হয়। যেমন-

ব্যক্তিনাম: হাবিব, সজল, লতা, শম্পা।
স্থাননাম: ঢাকা, বাংলাদেশ, হিমালয়, পদ্মা।
কালনাম: সোমবার, বৈশাখ, জানুয়ারি, রমজান।
সৃষ্টিনাম: গীতাঞ্জলি, সঞ্চিতা, ইত্তেফাক, অপরাজেয় বাংলা।

২. জাতি-বিশেষ্য:
জাতি-বিশেষ্য সাধারণ-বিশেষ্য নামেও পরিচিত। এ ধরনের বিশেষ্য নির্দিষ্ট কোনো নামকে না বুঝিয়ে প্রাণী ও অপ্রাণীর সাধারণ নামকে বোঝায়। যেমন মানুষ, গরু, ছাগল, ফুল, ফল, নদী, সাগর, পর্বত ইত্যাদি।

৩. বস্তু-বিশেষ্য:
কোনো দ্রব্য বা বস্তুর নামকে বস্তু-বিশেষ্য বলে। যেমন ইট, লবণ, আকাশ, টেবিল, বই ইত্যাদি।

৪. সমষ্টি-বিশেষ্য:
এ ধরনের বিশেষ্য দিয়ে ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টিকে বোঝায়। যেমন: জনতা, পরিবার, ঝাঁক, বাহিনী, মিছিল ইত্যাদি।

৫. গুণ-বিশেষ্য:
গুণগত অবস্থা ও ধারণার নামকে গুণ-বিশেষ্য বলে। যেমন: সরলতা, দয়া, আনন্দ, গুরুত্ব, দীনতা, ধৈর্য ইত্যাদি।

৬. ক্রিয়া-বিশেষ্য:
যে বিশেষ্য দিয়ে কোনো ক্রিয়া বা কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়া-বিশেষ্য বলে। যেমন: পঠন, ভোজন, শয়ন, করা, করানো, পাঠানো, নেওয়া ইত্যাদি।

অথবা, খ) ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করো (যেকোনো পাঁচটি):

প্রদত্ত শব্দ = ব্যাসবাক্য = সমাসের নাম
বাহুলতা = বাহু লতার ন্যায় = উপমিত কর্মধারয় সমাস
আদিগন্ত = দিগন্ত পর্যন্ত = অব্যয়ীভাব সমাস
*সহোদর = সমান উদর যার = বহুব্রীহি সমাস
*দম্পতি = জায়া ও পতি = দ্বন্দ্ব সমাস
তেপান্তর = তিন প্রান্তরের সমাহার = দ্বিগু সমাস
*নদীমাতৃক = নদী মাতা যার = বহুব্রীহি সমাস
জ্যোৎস্নারাত = জ্যোৎস্না শোভিত রাত = মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস
চিরসুখী = চিরকাল ব্যাপীয়া সুখী = দ্বিতীয়া তৎপরুষ সমাস

৩. ক) একটি সার্থক বাক্যের কী কী গুণ থাকা আবশ্যক? উদাহরণসহ আলোচনা করো। ৫

বাক্য:
যে পদ বা পদ সমষ্টি দ্বারা বক্তার পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ পায় তাকে বাক্য বলে। যেমন: আমি একাদশ শ্রেণিতে পড়ি।

বাক্যের গুণ:
অর্থ স্পষ্ট হওয়ার জন্য আকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি, সম্পূর্ণ-মনোভাব প্রকাশ এবং অর্থগত ও ভাবগত মেল বন্ধন হলো বাক্যের গুণ।

একটি সার্থক বাক্যের তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। যথা:

ক. আকাঙ্ক্ষা:
বাক্যের অন্তর্গত একটি পদের পর তার পরবর্তী পদ শোনার যে আগ্রহ তাকেই আকাঙ্ক্ষা বলে। একটি সার্থক বাক্যে এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হয়। কোনো বাক্যে এই আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ থাকলে তা বাক্য হিসেবে সার্থক হয় না। যেমন: ‘ঢাকা বাংলাদেশের’ বললে শ্রোতার আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় না কিন্তু ‘ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী’ বললে শ্রোতার আর আকাঙ্ক্ষা থাকে না। সুতরাং ‘ঢাকা বাংলাদেশের’ বাক্য নয়, ‘ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী’ একটি সার্থক বাক্য।

খ. আসত্তি:
বাক্যের সুশৃঙ্খল পদবিন্যাসকেই আসত্তি বলে। বাক্যস্থিত পদসমূহের বিন্যাস সুশৃঙ্খল বা যথাযথ না হলে তাকে বাক্য বলা যায় না। যেমন: ‘সাদা বকের দল আকাশে উড়ছে।’ উল্লিখিত বাক্যে পদসমূহের বিন্যাস সুশৃঙ্খল বা যথাযথ হওয়ায় এটি একটি সার্থক বাক্যে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই পদসমষ্টিকে যদি সুশৃঙ্খলভাবে বিন্যাস না করে বলা হয়, ‘সাদা উড়ছে দল বকের আকাশে’ তাহলে আসত্তি গুণের অভাবে বাক্যটি সার্থক হবে না। তাই একটি সার্থক বাক্য গঠনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আসত্তি গুণটি থাকতে হবে।

গ. যোগ্যতা:
বাক্যে ব্যবহৃত পদগুলোর অর্থ ও ভাবগত মিল বা সামঞ্জস্যকে যোগ্যতা বলে। একটি সার্থক বাক্য গঠনের ক্ষেত্রে অর্থ ও ভাবগত অন্বয় রক্ষিত না হলে বাক্য তার যোগ্যতা হারায়। যেমন: ‘গরুগুলো আকাশে উড়ছে।’ বাক্যটিতে আকাঙ্ক্ষা এবং আসত্তি গুণ রক্ষিত হলেও এটি সার্থক বাক্য নয়; কেননা, এতে ব্যবহৃত পদগুলোর সঙ্গে ভাবের কোনো সাদৃশ্য নেই। কিন্তু এর পরিবর্তে যদি বলা হয়, ‘পাখিগুলো আকাশে উড়ছে।’ তাহলে এটি যোগ্যতাসম্পন্ন একটি সার্থক বাক্য হয়ে উঠবে।

অথবা, খ) যেকোনো পাঁচটি বাক্যের অপপ্রয়োগ শুদ্ধ করে লেখো:

শুদ্ধ বাক্য =>প্রদত্ত বাক্য
i. সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমাদের একান্তভাবেই কাম্য।
=>সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ আমাদের একান্তভাবেই কাম্য।
ii. দরিদ্রের কথা বাঁশি হলে ফলে।
=>দরিদ্রের কথা বাসি হলেও ফলে।
iii. তাকে বাড়ি যাইতে দাও।
=>তাকে বাড়ি যেতে দাও।
iv. ফলজ বৃক্ষ বেশি বেশি লাগাতে হবে।
v. তার সৌজন্যতায় মুগ্ধ হলাম।
vi. বাংলা বানান আয়ত্ব করা বেশ কঠিন।
vii. পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে।
viii. অদ্যবধি তাহার দেখা নাই।

এইচএসসি ২০২২ বাংলা ২য় পত্র বরিশাল বোর্ড (নির্মিতি অংশ)

8. ক) যেকোনো পাঁচটি শব্দের পারিভাষিক রূপ লেখো: ৫

প্রদত্ত শব্দ =>পারিভাষিক শব্দ
Acting =>ভারপ্রাপ্ত
Biography =>জীবনচরিত
Documentary =>প্রামাণ্যচিত্র, তথ্যচিত্র
Hygiene =>স্বাস্থ্যবিজ্ঞান
Manifesto =>ইশতেহার
Subsidy =>ভর্তুকি
Vacation =>অবকাশ
Warcrime =>যুদ্ধাপরাধ

অথবা, খ) বাংলায় অনুবাদ করো:
Nothing is useless in the world. Even the commonest things we see around us have also their uses. The rocks we have frequented, may hide a rich mine. A divine intention underlines creation. There is nothing low, nothing mean.

বঙ্গানুবাদ:
পৃথিবীতে কোনোকিছুই ফেলনা নয়। এমনকি আমাদের চারপাশের সবচেয়ে সাধারণ জিনিসগুলোরও উপযোগিতা রয়েছে। যে পাথুরে শিলায় আমরা ঘোরাঘুরি করি, তার নিচেই হয়তো লুকানো থাকে সমৃদ্ধ খনি। সৃষ্টির পেছনে থাকে দৈব অভিপ্রায়। কোনোকিছুই হীন নয়, নগণ্য নয়।

৫. ক) তোমার এলাকায় ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে পৌরসভা মেয়র অথবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কছে একটি আবেদনপত্র লেখো। ১০

অথবা, খ) তোমার কলেজে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপনের ওপর একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

৬. ক) সারাংশ লেখো: ১০
জাতি শুধু বাইরের ঐশ্বর্য-সম্ভার, দালান-কোঠার সংখ্যা বৃদ্ধি কিংবা সামরিক শক্তির অপরাজেয়তায় বড়ো হয় না, বড়ো হয় অন্তরের শক্তিতে, নৈতিক চেতনায় আর জীবনপণ করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ক্ষমতায়। জীবনের মূল্যবোধ ছাড়া জাতীয় সত্তার ভিত কখনো শক্ত আর দৃঢ় হতে পারে না। মূল্যবোধ জীবনাশ্রয়ী হয়ে জাতির সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে পড়লেই তবে জাতি অর্জন করে মহত্ত আর মহৎ কর্মের যোগ্যতা। সবরকম মূল্যবোধের বৃহত্তম বাহন ভাষা তথা মাতৃভাষা, আর তা ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব লেখক ও সাহিত্যিকদের।

অথবা, খ) ভাব-সম্প্রসারণ করো:

মিথ্যা শুনিনি ভাই এই হৃদয়ের চেয়ে বড়ো কোনো মন্দির-কাবা নাই।

৭. ক) ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একজন প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা ও একজন তরণের মধ্যে সংলাপ রচনা করো। ১০

অথবা, খ) প্রদত্ত সংকেত অবলম্বনে ‘ধৈর্যের ফল’ শিরোনামে একটি খুদেগল্প লেখো। গল্প সংকেত: ধৈর্য ধারণ করলে যেকোনো বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়।

(উপকৃত হলে কিংবা কনফিউশান থাকলে দয়া করে কমেন্ট করবেন। ভুল ধরিয়ে দিতে পারলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন, ইনশাআল্লাহ্।)

এইচএসসি বাংলা ২য় পত্র সকল বোর্ড প্রশ্ন ও সমাধান (২০১৮-২০২৪)

এসএসসি বাংলা ২য় পত্র সকল বোর্ড প্রশ্ন  ও সমাধান (২০২০-২৪)

মাদ্রাসা বোর্ডের দাখিল বাংলা ২য় প্রশ্ন ও সমাধান (২০২০-২০২৪)

ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষার বাংলা প্রশ্ন  (২০০৮-২০২৪)

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top